শুরু থেকে সাতক্ষীরায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভালোভাবে প্রতিরোধ করেছিল প্রশাসন। রোববার (১৭ মে) বিকেলে হঠাৎ পাল্টে যায় করোনা পরিস্থিতির চিত্র। একসঙ্গে ২৪ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। করোনা আক্রান্তরা করেছেন ঈদের কেনাকাটা। ১ মে নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি ট্রাকে সাতক্ষীরার দেবহাটায় ফেরেন ২৪ জন ইটভাটা শ্রমিক। তাদের দেবহাটা খানবাহাদুর আহসানউল্লাহ কলেজের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ’রাখা হয়। সেখানে ৫ মে এক যুবকের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর বাকিদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বাকি ২৩ শ্রমিকের উপসর্গ না থাকায় ১৪ মে কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু দুইদিন পর ২৩ শ্রমিকের সবার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে।
জানা গেছে, আক্রান্ত ২৩ শ্রমিকের মধ্যে এক পরিবারের দুই শিশু ও তার মা-বাবার করোনা পজিটিভ এসেছে। তারা দেবহাটার খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ কলেজে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। তাদের বাড়ি সাতক্ষীরা সদরের ধূলিহর এলাকায়। কোয়ারেন্টাইনমুক্ত হয়ে তারা দেবহাটা থকে সাতক্ষীরার বাড়িতে ফেরেন। আক্রান্তদের মধ্যে দেবহাটা সদর ইউনিয়নের একজন গ্রাম পুলিশও রয়েছেন। বাকি আক্রান্তদের বাড়ি দেবহাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। দেবহাটা উপজেলার বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান শাওন বলেন, কোয়ারেন্টাইন থেকে ১৪ মে মুক্তির পর এসব শ্রমিক পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করাসহ বাজারে ঘুরেছেন। কেউ ভ্যান চালিয়েছেন। আক্রান্তরা এলাকায় চষে বেড়িয়েছেন। মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে দেবহাটা উপজেলা।
হঠাৎ এ খবর পাওয়ার পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। দেবহাটা থানা পুলিশের ওসি বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, ট্রাকে এসব শ্রমিক ১ মে দেবহাটায় ফেরার পর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। তবে আমাদের না জানিয়ে তাদের কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আক্রান্ত সবার বাড়িই লকডাউন করা হবে। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন বলেন, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে করোনা আক্রান্তদের এলাকায় ঘুরে বেড়ানো অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে বিষয়টি আগে কেউ প্রশাসন বা পুলিশকে জানায়নি। করোনা আক্রান্ত সবার বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পেলে করোনা ছড়িয়ে পড়া ইউনিয়নগুলোও লকডাউন করা হবে। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত বলেন, বিকেলে হাতে পাওয়া রিপোর্টে ২৪ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এর মধ্যে দেবহাটা উপজেলার ২৩ জন। আর আশাশুনি উপজেলার একজন। দেবহাটা উপজেলার সবাই ইটভাটা শ্রমিক। তারা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। সেখানে ২৪ জন ইটভাটা শ্রমিক ছিলেন। প্রথমে একজনের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর বাকিদের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়।